রেমিট্যান্স প্রেরণকারী শীর্ষ দেশ এখন সংযুক্ত আরব আমিরাত বা ইউএই। সদ্য বিদায়ি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ইউএই থেকে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। তার আগের অর্থবছরে (২০২২-২৩) রেমিট্যান্স প্রেরণকারী দেশগুলোর মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত ছিল তৃতীয় অবস্থানে। সেখান থেকে গত অর্থবছর শেষে দেশটি শীর্ষে উঠে এসেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এক বছরের ব্যবধানে ইউএই থেকে রেমিট্যান্স আয় বেড়েছে ১৬০ কোটি ডলার বা প্রায় ৫৩ শতাংশ। তাতেই শীর্ষে উঠে এসেছে দেশটি। ইউএইর পর গত অর্থবছরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আয় এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স আয় এসেছে প্রায় ২৯৬ কোটি মার্কিন ডলার। আর তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাজ্য। দেশটি থেকে সদ্য বিদায়ি অর্থবছরে রেমিট্যান্স আয় এসেছে ২৭৯ কোটি ডলার।

এদিকে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে রেমিট্যান্স আয় প্রেরণকারী শীর্ষ দেশ ছিল সৌদি আরব। সদ্য বিদায়ি অর্থবছর শেষে দেশটির শীর্ষ অবস্থান থেকে চতুর্থ স্থানে নেমে গেছে। কারণ, দেশটি থেকে বৈধ পথে আসা রেমিট্যান্স আয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে গেছে। এক বছরের ব্যবধানে সৌদি আরব থেকে রেমিট্যান্স আয় কমেছে ১০৩ কোটি ডলার বা প্রায় ২৭ শতাংশ।

সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো বা বিএমইটির তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সাল থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে এ দেশ থেকে জনশক্তি রপ্তানি ধারাবাহিকভাবে কমছে। সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে ইউএইতে বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি রপ্তানি হয়েছে ১ লাখের কিছু বেশি। ২০২৩ সালে তা কমে দাঁড়ায় ৯৮ হাজারে। আর চলতি বছরের জুন পর্যন্ত দেশটিতে গেছে প্রায় সাড়ে ৩৩ হাজার শ্রমিক।

বিএমইটির তথ্য অনুযায়ী, ২০০৪ সাল থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ইউএইতে বাংলাদেশ থেকে মোট জনশক্তি রপ্তানি হয়েছে প্রায় সাড়ে ২১ লাখ। তার বিপরীতে সৌদি আরবে একই সময়ে এ দেশ থেকে গেছে প্রায় ৩৯ লাখ শ্রমিক। সেই হিসাবে ইউএইর চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ বেশি শ্রমিক রয়েছে সৌদি আরবে। তা সত্ত্বেও সৌদি আরব থেকে রেমিট্যান্স আয় কমছে আর উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, গত অর্থবছরে রেমিট্যান্স আয়ের দিক থেকে শীর্ষে থাকা ১০ দেশের মধ্যে সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও কুয়েত থেকে রেমিট্যান্স আয় আসা আগের বছরের তুলনায় কমেছে। আর বাকি ছয়টি দেশ থেকে আয় আসা বেড়েছে। এর মধ্যে রেমিট্যান্স আয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ওমানে। মালয়েশিয়া থেকে আসা রেমিট্যান্স আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৫ শতাংশ। আর যুক্তরাজ্যের ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি ৩৪ শতাংশ।

বিএমইটির তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালের পর ওমানে সবচেয়ে বেশি শ্রমিক গেছেন ২০২২ ও ২০২৩ সালে। এই দুই বছরে দেশটিতে ৩ লাখের বেশি শ্রমিক গেছেন। একইভাবে ২০০৪ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত মোট ২০ বছরের মধ্যে মালয়েশিয়ায় সর্বোচ্চ শ্রমিক গেছেন গত বছর। ২০২৩ সালে বাংলাদেশ থেকে সাড়ে ৩ লাখের বেশি শ্রমিক মালয়েশিয়া গেছেন। সেই সঙ্গে গত ২০ বছরের মধ্যে ২০২৩ সালেই সর্বোচ্চসংখ্যক বাংলাদেশি গেছেন যুক্তরাজ্যে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *