সোনা আমদানিতে সম্প্রতি শুল্ক কমিয়েছে সরকার। ফলে দেশটিতে মূল্যবান ধাতুটির অভ্যন্তরীণ দাম কমেছে। এ কারণে চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে ভারতে বাড়তে পারে স্বর্ণের ব্যবহার। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল (ডব্লিউজিসি)। খবর রয়টার্স।

বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ স্বর্ণ ব্যবহারকারী দেশ ভারত। দেশটিতে মূল্যবান ধাতুটির ক্রয় বেড়ে গেলে আন্তর্জাতিক বাজারে তার প্রভাব পড়বে।

এ বিষয়ে ডব্লিউজিসির ইন্ডিয়ান অপারেশনের সিইও শচীন জৈন বলেন, ‘সেপ্টেম্বরে শুরু হওয়া প্রধান উৎসব মৌসুমের আগে ‌স্বর্ণের আমদানিতে ৯ শতাংশ শুল্ক হ্রাস করা হয়েছে। এছাড়া সামনের অনুকূল আবহাওয়াও স্বর্ণের চাহিদা বাড়াতে ভূমিকা রাখবে।’

প্রসঙ্গত, ভারতের অর্থনীতি প্রধানত কৃষির ওপর নির্ভরশীল। এছাড়া দেশটিতে স্বর্ণের চাহিদার দুই-তৃতীয়াংশই আসে গ্রামীণ অঞ্চল থেকে, যেখানে গহনাকে ঐতিহ্যবাহী সম্পদের ভাণ্ডার হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

শচীন জৈন বলেন, ‘ভারতে জিডিপি বৃদ্ধির পূর্বাভাস ও গ্রামীণ খাতের পুনরুদ্ধার চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে চাহিদা বৃদ্ধির পেছনে ভূমিকা রাখতে পারে।’

ভারতে এর আগে স্বর্ণের আমদানি শুল্ক ছিল ১৫ শতাংশ। গত সপ্তাহে তা কমিয়ে ৬ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। শিল্পসংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারের শুল্ক কমানোর এ সিদ্ধান্ত খুচরা বাজারে চাহিদা বাড়াতে ও চোরাচালান কমাতে সহায়তা করতে পারে। শুল্ক হ্রাসের পর ভারতে গত সপ্তাহে প্রতি ১০ গ্রাম স্বর্ণের অভ্যন্তরীণ দাম ৬৭ হাজার ৫০০ রুপিতে নেমে এসেছে, যা গত চার মাসে সর্বনিম্ন।

প্রতিবেদনে ডব্লিউজিসি আরো জানায়, ভারতে চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) স্বর্ণের চাহিদা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫ শতাংশ কমেছে। চাহিদা নেমেছে ১৪ কোটি ৯৭ লাখ টনে। এছাড়া ভারতে চলতি বছর স্বর্ণের সামগ্রিক চাহিদা হতে পারে ৭০০-৭৫০ টন, যা গত চার বছরে সর্বনিম্নে।

বিশ্বে স্বর্ণের শীর্ষ ব্যবহারকারী দেশ চীন। গত বৃহস্পতিবার ডব্লিউজিসির বরাত দিয়ে চায়না ডেইলি এক প্রতিবেদনে জানায়, চীনে চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) স্বর্ণ খাতে বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। এ সময় দেশটিতে গোল্ড এক্সচেঞ্জ-ট্রেডেড ফান্ড (ইটিএফ) প্রায় ১ হাজার ৪০০ কোটি ইউয়ানে (২ হাজার কোটি ডলার) বা ২৫ টনে পৌঁছেছে।

এ বিষয়ে ডব্লিউজিসির সিইও (চীন) ওয়াং লিক্সিন বলেন, ‘দেশে সুদের হার হ্রাস ও স্থানীয় সম্পদ থেকে কম লাভের ঝুঁকির কারণে ‘সেইফ হ্যাভেন’ হিসেবে খ্যাত স্বর্ণ খাতে বিনিয়োগ বাড়ছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *