ব্যবসার জন্য নতুন নীতিমালা ঘোষণা করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) দুবাই কর্তৃপক্ষ। এর মাধ্যমে বিশেষায়িত ফ্রি জোন অঞ্চলের জন্য নিবন্ধিত কোম্পানিগুলো শহরটির অন্যান্য এলাকায় কাজ করতে পারবে। এতোদিন মাত্র ফ্রি জোনে একটি কোম্পানি কেবল জোনের মধ্যে এবং ইউএইয়ের বাইরে কাজ করতে পারত। তবে ইউএইয়ের কোনও নন-ফ্রি জোনে তারা কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারত না।

দুবাইয়ের নির্বাহী পরিষদের চেয়ারম্যান, উপপ্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী যুবরাজ শেখ হামদান বিন মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাখতুম এ নির্দেশনা জারি করেন। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, এই পদক্ষেপটি ‘ব্যবসায়িক পরিবেশকে উন্নত করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি’ হিসেবে চিহ্নিত করবে। যা ফ্রি জোনের ব্যবসাগুলিকে ‘নিরবচ্ছিন্নভাবে মেইনল্যান্ডে একীভূত হতে’ সাহায্য করবে।

এতে বলা হয়েছে, ফ্রি জোন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লাইসেন্স পাওয়া যেকোনও কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান ওই অঞ্চলের বাইরে ও দুবাইয়ের মধ্যে যেকোনও জায়গায় কাজ করতে পারবে। তবে এটি দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল সেন্টারের মধ্যে ব্যবসা পরিচালনার জন্য লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।

এর লক্ষ্য হলো ২০৩৩ সালের মধ্যে দুবাইয়ের অর্থনীতিকে বর্তমানের তুলনায় দ্বিগুণ অর্থাৎ ৩২ লাখ কোটি দিরহাম বা ৮ লাখ ৭১ হাজার কোটি ডলারে উন্নীত করা। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলে বিশ্বের শীর্ষ তিনটি শহরের একটি হবে দুবাই। ডি-৩৩ পরিকল্পনার আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হলো ২০৩৩ সালের মধ্যে ৩০টি বেসরকারি কোম্পানিকে ইউনিকর্ন হিসেবে গড়ে তোলা।

ফ্রি জোনের বাইরে পরিচালিত কার্যক্রমের জন্য পৃথক আর্থিক রেকর্ড বজায় রাখতে হবে। এছাড়া কোনও কোম্পানি যদি দুবাইয়ের বাইরে কাজ করতে চায়, তবে তাদের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় লাইসেন্স ও পারমিট নিতে হবে।

গত বছরের প্রথম নয় মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) দুবাইয়ের অর্থনীতি ৩ দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে ৩৩ হাজার ৯৪০ কোটি দিরহামে পৌঁছেছে। এ প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে পাইকারি ও খুচরা বাণিজ্য, পরিবহন ও সঞ্চয় এবং আর্থিক ও বীমা কার্যক্রমসহ বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে অগ্রগতি।

মুক্ত অঞ্চল কী: মুক্ত-বাণিজ্য অঞ্চল বা ফ্রি জোন (এফটিজেড) হল বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল যা প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের কর ছাড় এবং শুল্ক সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়। দুবাইতে ৩০টির বেশি মুক্ত অঞ্চল কাজ করছে। দুবাই এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের এফটিজেড নিয়ম ও প্রবিধানের একটি বিশেষ কাঠামো অনুসারে পরিচালিত হয়। একটি মুক্ত অঞ্চল কর্তৃপক্ষ বিদেশি মালিকানাধীন ব্যবসাগুলিকে ব্যবসায়িক লাইসেন্স প্রদান করে।

সিদ্ধান্তে যা বলা হয়েছে: কোম্পানিগুলিকে তাদের কার্যক্রম সম্পর্কিত কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় বিধি অনুযায়ী চলতে হবে এবং মুক্ত অঞ্চলের বাইরে তাদের পরিচালিত কার্যক্রমের জন্য আলাদা আর্থিক রেকর্ড রাখতে হবে।’

এই সিদ্ধান্তের বিধানগুলি মুক্ত অঞ্চল বাইরে কাজ করতে ইচ্ছুক প্রতিষ্ঠানের উপর প্রযোজ্য, তবে দুবাই আন্তর্জাতিক আর্থিক কেন্দ্রের মধ্যে কাজ করার লাইসেন্স প্রাপ্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি এর অন্তর্ভুক্ত নয়। কারণ এতে তার নিজস্ব আইনগত এবং নিয়ন্ত্রক কাঠামো রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *