পৃথিবী থেকে হঠাৎ করে মানুষ হারিয়ে যায়? তবে কি হবে এই ধরণীর? সায়েন্স নেচার পেজ অনলাইনে এই সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। আসুন জেনে নেয়া যাক তিলে তিলে গড়া এই সভ্যতা মানুষের অভাবে কোথায় গিয়ে পৌঁছাতে পারে! পৃথিবী থেকে মানুষ হারিয়ে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে দুনিয়ার অধিকাংশ আলো নিভে যাবে। কেননা, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলো জ্বালানীর অভাবে কাজ বন্ধ করে দেবে। সৌর বিদ্যুতের প্যানেলগুলো বিদ্যুৎ উৎপাদন অব্যাহত রাখার সক্ষমতা রাখলেও যত্নের অভাবে একসময় তাতে ধুলোর আবরণ পড়বে।
ফলে সূর্যের আলো ধারণ করতে না পারায় সেগুলোও বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ করে দেবে। একমাত্র হাইড্রোলিক পাওয়ার প্ল্যান্ট’ই তার কার্যক্রম মানুষের সাহায্য ছাড়াই কিছুকাল অব্যাহত রাখতে সক্ষম হবে
দুই থেকে তিন দিনের মধ্যেই বিশ্বের অধিকাংশ পাতাল রেলপথে পানি জমে যাবে। এর কারণ হচ্ছে, ভূগর্ভস্থ লাইনগুলোর পানি নিষ্কাশনের পাম্পগুলো মানুষের অভাবে অচল থাকবে।
দশ দিন পর বিশ্বের অধিকাংশ পোষা এবং খামারের প্রাণীগুলো খাদ্যের অভাবে মৃত্যুবরণ করতে থাকবে। পোষা কুকুরগুলো খাদ্যের অভাবে হিংস্র হয়ে উঠবে এবং অন্য জীবিত প্রাণীর উপর আক্রমণ চালাবে।
ফলে পৃথিবীতে ধারাবাহিক বিপর্যয় দেখা যাবে। যার ভয়াবহতা ফুকুশিমা কিংবা চেরনোবিল পরমাণু কেন্দ্র বিপর্যয়ের চেয়েও মারাত্মক হবে।
তবে প্রকৃতি ঠিকই নিজেকে আত্মরক্ষা করতে সক্ষম হবে। উদ্ভিদগুলো ক্রমেই পরমাণু তেজস্ক্রিয়তার ক্ষতিকর প্রভাব কাটিয়ে উঠবে।
এক বছর বাদে পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা স্যাটেলাইটগুলো অচল হয়ে মাটির দিকে ছুটে আসতে থাকবে। ফলে মনে হবে আকাশে অসংখ্য তারা খসে পড়ছে।
মানুষ হারিয়ে যাওয়ার ২৫ বছর পর পৃথিবীর অধিকাংশ স্থান সবুজে পূর্ণ হয়ে যাবে। অর্থাৎ উদ্ভিদ স্বাধীনভাবে বেড়ে উঠবে। তবে কিছু স্থান সবুজ হারিয়ে মরুভূমিতে পরিণত হবে।
তিনশ’ বছর পর মানুষের তৈরি স্থাপনাগুলো জড়ায় জীর্ণ হওয়ার কারণে ভেঙ্গে যেতে থাকবে। লোহায় জং ধরবে, কালের বিবর্তনে ইট সিমেন্টের স্থায়িত্ব নষ্ট হয়ে ধুলোয় পরিণত হবে।
অবশ্য পৃথিবী যদি মানুষের জীবন সংশয়ের শঙ্কা যেমন পরমাণু যুদ্ধ, উল্কাপাতের মতো ঘটনা এড়িয়ে যেতে পারে তবে এই ধরণীতে প্রাণীজগত আরও ৫০ কোটি বছর টিকে থাকতে পারবে। সূর্য আরো ৬শ’ কোটি বছর আমাদের আলো দিয়ে যাবে।
এএইচ/এএইচ