নানান রকমের রোগ এসেছে। কিছু রোগ গেড়ে বসেছে আবার কিছু রোগ কমে গেছে। এই যেমন করোনা বিশ্বে মহামারী আকার ধারণ করে এখন স্তিমিত হয়ে আছে, তবে আছে। সব রোগ ঝিমিয়ে পড়ে না, ঝিমিয়ে পড়লেও নিজে আরও কিছু মানুষকে ঘুম পাড়িয়ে নেয়। এমনই এক রোগ এনসেফালিটিস লেথারজিয়া। এই রোগ পৃথিবীর ১০ লাখ মানুষকে ঘুম পাড়িয়েছিল।

১৯১৬ থেকে ১৯৩১ সালের মধ্যে এই রোগের বিস্তার ঘটে। ১৯১৬ সালে এই রোগের বিস্তার শুরু হলেও ১৯২৮ সালে শেষ হয়েছিল। তবে ১৯৩০ সাল পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন ভাবে রোগটি ছিল। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপে বিস্তার লাভ করেছিল। এটি মূলত মস্তিষ্কের একটি রোগ। এবং এটি এখনও চিকিৎসা বিজ্ঞানে রহস্য, যার কারণ আর প্রতিকার সম্পর্কে চিকিৎসকরা খুবই কম জানে।

এই রোগে আক্রান্তরা প্রথমে গলাব্যথা অনুভব করত বা সর্দিজ্বরে ভুগত তারপর তন্দ্রা এবং অলসতা দেখা দিত। তারা যখন তখন ঘুমিয়ে পড়তো। কেউ কেউ খেতে খেতে ঘুমিয়ে পড়েছে। এই ঘুম চলতেই থাকত। প্রায় অজ্ঞানের মতো থাকত তারা বছরের পর বছর। কোনো কথা বলত না, নড়াচড়া করত না। এই রোগে আক্রান্তদের তিন ভাগের এক ভাগ মানুষ মারা গিয়েছিল। কেউ কেউ সেরে উঠেছিল, অবশিষ্টরা সারাটা জীবন নানা ধরনের কষ্ট বয়ে বেড়াত। তাদের অনেকেই কয়েক মাস বা বছর ধরে কোমায় ছিলেন।

তবে ১৯৬০ সালের দিকে কিছু ওষুধ আবিষ্কৃত হয়েছিল যার গুণে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে যারা কোমায় ছিল তাদের অনেকের ৩০ বছর পর জ্ঞান ফেরেছিল। যদিও তাদের মধ্যে অনেকেই আবার কোমায় ফিরে যায়। তাদের কোমায় যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই রোগকেও সবাই ভুলে গেছে। এটা নিয়ে আর তেমন কোনও গবেষণা হয় নি। তাই চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই রোগ এখনও রহস্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *