সাম্প্রতিক জলাবদ্ধতা সমস্যার স্থায়ী সমাধানে ও ভবিষ্যৎ জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ‘তাসরীফ’ নামে একটি মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছে দুবাই মিউনিসিপ্যালিটি। এই বৃহৎ নিষ্কাশন প্রকল্পের আওতায় প্রাথমিক পর্যায়ে প্রায় ১৪৪ কোটি (১.৪৩৯ বিলিয়ন) দিরহাম ব্যয়ে চারটি প্রধান প্রকল্পের চুক্তি অনুমোদন করা হয়েছে। প্রকল্পটির লক্ষ্য দুবাইয়ের ড্রেনেজ নেটওয়ার্কের উন্নয়ন, পুনর্বাসন ও সম্প্রসারণের মাধ্যমে বন্যার পানি দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা শক্তিশালী করা।
গালফ নিউজের খবরে বলা হয়েছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভাইস প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী ও দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুমের দিকনির্দেশনায় এই কৌশলগত ও টেকসই অবকাঠামো প্রকল্পটি গৃহীত হয়েছে। দুবাই মিউনিসিপ্যালিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই উদ্যোগ দুবাইয়ের টেকসই ও জলবায়ু-সহনশীল অবকাঠামো নির্মাণের প্রতিশ্রুতির অংশ এবং বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় আধুনিক শহর হিসেবে এর অবস্থানকে আরও সুদৃঢ় করবে।
‘তাসরীফ’ প্রকল্পটি দুবাইয়ের ইতিহাসে অন্যতম বৃহৎ ও আধুনিক নিষ্কাশন ব্যবস্থা হতে চলেছে। এর আওতায় ৩৬ কিলোমিটারের বেশি নতুন নিষ্কাশন লাইন নির্মাণ করা হবে, যা মূল তাসরীফ টানেলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পুরো আমিরাত জুড়ে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থাকে উন্নত ও কার্যকর করে তুলবে। এর ফলে দীর্ঘমেয়াদে রক্ষণাবেক্ষণ খরচও উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
নতুন এই উন্নত নিষ্কাশন নেটওয়ার্ক প্রাথমিকভাবে নাদ আল হামার, দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন এলাকা, আল গারহুদ, আল রাশিদিয়া, আল কোয়াজ, জাবিল, আল ওয়াসল, জুমেইরাহ ও আল বাদা সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পরিষেবা দেবে।
দুবাই মিউনিসিপ্যালিটির ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মারওয়ান আহমেদ বিন ঘালিতা বলেছেন, “এই প্রকল্পগুলো দুবাইয়ের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার ক্ষমতা ৭০০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করবে। এটি আগামী ১০০ বছরের জন্য শহরকে বন্যার ঝুঁকি থেকে রক্ষা করবে এবং দুবাইকে বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত ও জলবায়ু-সহনশীল শহরগুলোর কাতারে নিয়ে যাবে।”
তিনি আরও যোগ করেন, ‘তাসরীফ একটি রূপান্তরমূলক, কৌশলগত ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন প্রকল্প। এটি টেকসই নগর ব্যবস্থাপনার এক অনন্য উদাহরণ, যা দুবাইকে আরও বাসযোগ্য ও আকর্ষণীয় করে তুলবে।’
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রকল্পটি দীর্ঘমেয়াদে নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনার খরচ ২০ শতাংশ পর্যন্ত কমাবে এবং নিষ্কাশন অবকাঠামোর আয়ুষ্কাল বাড়াবে। পুরো ‘তাসরীফ’ প্রকল্পের মোট আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০ বিলিয়ন দিরহাম, যা আগামী এক শতাব্দী পর্যন্ত শহরকে সুরক্ষা দেবে এবং ভবিষ্যতের চাহিদা অনুযায়ী এটি সম্প্রসারণযোগ্য।
মোটিভেশনাল উক্তি