শাহজাদিকে মৃ;ত্যুদণ্ড দিয়েছে আবু ধাবির আদালত। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁকে ফাঁ;সি দেওয়া হবে। আপাতত শাহজাদিকে রাখা হয়েছে আবুধাবির আল ওয়াথবা কারাগারে। সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হবে ফাঁসির মঞ্চে।

বছর চারেক আগে আবু ধাবি পাড়ি দিয়েছিলেন উত্তর প্রদেশের তরুণী শাহজাদি। অনেক স্বপ্ন ছিল। বিলাসবহুল জীবন কাটাবেন, কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা রোজগার করবেন। সেই সব স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেল।

কারণ শাহজাদিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আবু ধাবির আদালত। মঙ্গলবারের মধ্যে তাঁকে ফাঁ;সি দেওয়া হবে। সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হবে ফাঁ;সির মঞ্চে।

পরিবারের সঙ্গে শেষবার কথা বলার সুযোগ পেয়েছেন শাহজাদি। উত্তর প্রদেশের বান্দায় তাঁদের বাড়ি। বাবাকে ফোন করে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। কাঁদতে কাঁদতে জানান, এটাই আমার শেষ ফোন। আর দেখা হবে না কোনও দিন।

ইতিমধ্যেই আবু ধাবির সরকার ও রাষ্ট্রপতির কাছে মেয়ের প্রাণভিক্ষার আবেদন জানিয়েছেন শাহজাদির পরিবার। তাঁদের দাবি, মেয়ে নির্দোষ। সমস্ত তথ্য-প্রমাণ আর একবার খতিয়ে দেখা হোক।

জানা গিয়েছে, ২০২১ সালে আবু ধাবি যান শাহজাদি। আগ্রার উজাইরের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল তাঁর। বিলাসবহুল জীবনের প্রলোভন দেখিয়ে উজাইর তাঁকে এক দম্পতির কাছে বিক্রি করে দেন। বান্দার ম্যাজেস্ট্রেট আদালতে উজাইর এবং ওই দম্পতির বিরুদ্ধে মানব পাচারের মামলা রুজু করা হয়েছে।

ছোটবেলায় রান্না করতে গিয়ে শাহজাদির মুখ এবং শরীরের বেশ কিছুটা অংশ পুড়ে গিয়েছিল। ২০২০ সালে, সামাজিক মাধ্যমে উজাইরের সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁর। উজাইর তাঁকে জানায় যে, আবু ধাবিতে চিকিৎসা ব্যবস্থা খুব ভাল। পোড়া দাগ ঠিক হয়ে যাবে। তাছাড়া সেখানে অনেক টাকা রোজগারেরও সুযোগ রয়েছে।

ফাঁদে পড়ে যান শাহজাদি। ২০২১ সালে উজাইর তাঁকে আবু ধাবি নিয়ে যায়। সেখানে তাঁরই আত্মীয় এক দম্পতি ফায়জ এবং নাদিয়ার কাছে মোটা টাকায় বিক্রি করে দেন শাহজাদিকে। তাঁদের একরত্তিকে দেখভাল করাই ছিল তাঁর কাজ।

কয়েকদিনের মধ্যেই ফায়জ এবং নাদিয়ার চার মাসের সন্তানের মৃত্যু হয়। সব দায় গিয়ে পড়ে শাহজাদির ঘাড়ে। পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। শুরু হয় তদন্ত। আবু ধাবির আদালতে দোষী সাব্যস্ত হন শাহজাদি। তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।

যদিও শাহজাদি এবং তাঁর পরিবারের দাবি, ভুল চিকিৎসার কারণে সদ্যোজাতর মৃত্যু হয়েছে। তবে ওই দম্পতি সে সব মানতে নারাজ। ১৬ ফেব্রুয়ারি আবু ধাবি থেকে ফোন যায় উত্তর প্রদেশে। শাহজাদি ফোন করেন তাঁর বাবাকে।

ফোনে কাঁদতে কাঁদতে শাহজাদি জানান, তিনি জেলে একা রয়েছেন। জেল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁকে ফাঁ;সি দেওয়া হবে। তাঁর শেষ ইচ্ছা জানতে চাওয়া হয়েছিল। তখনই পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে চান শাহজাদি। তারপর এই ফোন করেছেন। উত্তর প্রদেশে এখন আতঙ্কের প্রহর গুণছে শাহজাদির পরিবার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *