প্রত্যক্ষদর্শী এবং ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বুধবার কয়েক ডজন ইসরায়েলি সৈন্য দখলকৃত পশ্চিম তীরের শহর নাবলুসে হা*ম*লা চালায়। রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, অভিযানে কমপক্ষে সাতজন আ*হ*ত হয়েছে।
এএফপির সাথে যোগাযোগ করা হলে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী নিশ্চিত করেছে যে তাদের বাহিনী উত্তর পশ্চিম তীর শহরে অভিযান পরিচালনা করছে, তবে তাদের উদ্দেশ্য নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি।
বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ভোর ৩:০০ টার দিকে (০০০০ জিএমটি) অভিযান শুরু হয়, প্রায় ৩০,০০০ জনসংখ্যার নাবলুসের পুরাতন শহরের বেশ কয়েকটি পাড়ায় সাঁজোয়া যানে করে সৈন্যরা হা*ম*লা চালায়।
প্যালেস্টাইন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির মতে, ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের আসন রামাল্লায় তুলনামূলকভাবে বিরল অভিযান চালানোর একদিন পর, শহরের কেন্দ্রস্থলে একটি মুদ্রা বিনিময়কে লক্ষ্য করে এবং কয়েক ডজন ফিলিস্তিনিকে আ*হ*ত করে।
নাবলুসের গভর্নর ঘাসান দাগলাস এএফপিকে বলেছেন যে বুধবারের “হা*ম*লা… কেবল শক্তি প্রদর্শনের কোন যুক্তি নেই।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন যে সৈন্যরা এক বৃদ্ধ দম্পতিকে তাদের বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে।
নাবলুসে অবস্থিত ফিলিস্তিনি মেডিকেল রিলিফ সংস্থার প্রধান ঘাসান হামদান বলেন, ইসরায়েলি সেনারা “পুরাতন শহরের ভেতরে ঘরবাড়ি ও দোকানপাটে তল্লাশি চালাচ্ছে, অন্যদিকে কিছু বাড়ি সামরিক পোস্টে পরিণত করা হয়েছে।”
এএফপি ফুটেজে দেখা গেছে, রাস্তায় ইসরায়েলি বাহিনী এবং সামরিক যানবাহন মোতায়েন করা হয়েছে, কিছু সৈন্য ছাদে অবস্থান নিয়েছে।
দাগলাস বলেন, সেনাবাহিনী ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে যে অভিযান বিকেল ৪:০০ টা পর্যন্ত চলবে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, পুরাতন শহরের পূর্ব প্রবেশপথে সংঘর্ষ শুরু হয়, যেখানে তরুণরা ইসরায়েলি সৈন্যদের দিকে পাথর ছুঁড়ে মারে, যারা কাঁদানে গ্যাস এবং তাজা গু*লি ব্যবহার করে জবাব দেয়।
রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে যে তাদের দলগুলি রাবার বুলেটে আ*হ*ত পাঁচজনকে, তাজা বুলেটের আঘাতে আ*হ*ত একজনকে এবং “শারীরিক আক্রমণের” পরে আরও একজনকে চিকিৎসা দিয়েছে।
চিকিৎসা সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, অভিযানের সময় “পড়ে” গিয়ে আরও একজন আ*হ*ত হয়েছেন এবং কমপক্ষে ২৭ জন কাঁদানে গ্যাসে শ্বাসরোধে আক্রান্ত হয়েছেন।
ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রপতির মুখপাত্র নাবিল আবু রুদাইনাহ, সরকারি সংবাদ সংস্থা ওয়াফা কর্তৃক পরিচালিত এক বিবৃতিতে, “শহর ও শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি আক্রমণের তীব্র নিন্দা জানিয়ে” সাম্প্রতিক অভিযানের বৃদ্ধিকে “বিপজ্জনক, নিন্দনীয় এবং অগ্রহণযোগ্য” বলে অভিহিত করেছেন।
পুরাতন শহর নাবলুস বেশ কয়েকটি বড় ইসরায়েলি অভিযানের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ২০২২ এবং ২০২৩ সালে স্থানীয় সশস্ত্র যোদ্ধাদের একটি গোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে বৃহৎ পরিসরে অভিযান, পাশাপাশি ২০০২ সালে দ্বিতীয় ফিলিস্তিনি ইন্তিফাদা বা বিদ্রোহের সময়।
২০২৫ সালের জুনের শুরুতে, সেখানে একটি ইসরায়েলি সামরিক অভিযানে দুই ফিলিস্তিনি নি*হ*ত হন।
২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজা যু*দ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে, ১৯৬৭ সাল থেকে ইসরায়েল দখল করে থাকা পশ্চিম তীরে সহিংসতা বেড়েছে।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের পরিসংখ্যানের উপর ভিত্তি করে এএফপির এক হিসাব অনুসারে, গাজা যু*দ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি সেনা বা পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনকারীরা কমপক্ষে ৯৭২ জন ফিলিস্তিনিকে হ*ত্যা করেছে, যার মধ্যে জঙ্গি এবং বেসামরিক নাগরিকও রয়েছে।
ইসরায়েলি পরিসংখ্যান অনুসারে, একই সময়ে, কমপক্ষে ৩৬ জন ইসরায়েলি, যাদের মধ্যে বেসামরিক নাগরিক এবং নিরাপত্তা বাহিনী উভয়ই, এই অঞ্চলে হা*ম*লা বা সামরিক অভিযানের সময় নি*হ*ত হয়েছে।
মোটিভেশনাল উক্তি