টানা তৃতীয়বারের মতো বৈশ্বিক ধনকুবেরদের সবচেয়ে প্রিয় গন্তব্যের তকমা পেয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত। যুক্তরাজ্যভিত্তিক কনসালটেন্সি প্রতিষ্ঠান হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্সের ‘প্রাইভেট ওয়েলথ মাইক্রেশন রিপোর্ট ২০২৪’ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে এই তথ্য। -সিএনবিসি

প্রতিবেদনটিতে চলতি বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত যে দশটি শহরে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক কোটিপতি নিজেদের সম্পত্তি স্থানান্তর করেছেন, তার তালিকা দেওয়া আছে। বলা হয়েছে, আমিরাতে ন্যূনতম ১০ লাখ ডলারের সম্পত্তি কিনেছেন বা দেশটির ব্যাংকে রেখেছেন— চলতি ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত এমন ধনীদের সংখ্যা ১ লাখ ২৮ হাজারে পৌঁছেছে, যা রীতিমতো রেকর্ড। এর আগে কোনো বছর বিশ্বজুড়ে এত সংখ্যক ধনী আমিরাতে তাদের সম্পদ স্থানান্তর করেননি।

হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্সের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, যে গতিতে বৈশ্বিক ধনীরা আমিরাতে তাদের অর্থ-সম্পদ স্থানান্তর করছেন, তাতে বছর শেষ হওয়ার আগেই ১ লাখ ২৮ হাজারের সঙ্গে আরও যোগ হবেন অন্তত ৬ হাজার ৭০০ জন। আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক গোয়েন্দা সংস্থা নিউ ওয়ার্ল্ড ওয়েলথ থেকে তথ্য নিয়ে ‘প্রাইভেট ওয়েলথ মাইক্রেশন রিপোর্ট ২০২৪’ প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করেছে হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স। গত বছরও প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স। সেই প্রতিবেদনে তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে দুবাইয়ে নিজেদের সম্পত্তি স্থানান্তর করেছিলেন ১ লাখ ২০ হাজার বৈশ্বিক কোটিপতি।

নিউ ওয়ার্ল্ড ওয়েলথ এবং হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্সের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের শুরু থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বের মোট ১০টি দেশে সম্পদ স্থানান্তর করেছেন অধিকাংশ ধনকুবের। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে এই তালিকায় রয়েছে যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্র (২য়), সিঙ্গাপুর (৩য়), কানাডা (৪র্থ), অস্ট্রেলিয়া (৫ম), ইতালি (৬ষ্ঠ), সুইজারল্যান্ড (৭ম), গ্রিস (৮ম), পর্তুগাল (৯ম) এবং জাপান (১০ম)।

আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক গোয়েন্দাদের মতে, সহজ ও অনুকূল করনীতি, কৌশলগত অবস্থান, এবং আধুনিক অবকাঠামোর কারণে গত বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই আমিরাতে সম্পদ স্থানান্তর কিংবা স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য আগ্রহ দেখা যাচ্ছে বিশ্বের ধনকুবেরদের মধ্যে। এই ব্যাপারটি বুঝতে পেরেছে আমিরাতের সরকারও। বৈশ্বিক কোটিপতিদের জন্য কয়েক বছর আগে বিশেষ ‘গোল্ডেন ভিসা’ চালু করেছে দেশটির সরকার। এই ভিসাধারীরা যতদিন খুশি আমিরাতে অবস্থান, বিনিয়োগ, বাণিজ্য ও অন্যান্য অর্থনৈতিক কাজ করতে পারবেন।

হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্সের প্রাইভেট ক্লায়েন্ট বিভাগের প্রধান ডমিনিক ভোলেক এ প্রসঙ্গে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসিকে বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরে আমিরাতে বৈশ্বিক কোটিপতিদের সম্পদ স্থানান্তরের যে হিড়িক চলছে, তা অব্যাহত থাকলে সামনের বছরগুলোতে বৈশ্বিক সম্পদ ও ক্ষমতার ল্যান্ডস্কেপ ও ভিত্তিমূলে গভীর পরিবর্তন আমরা দেখতে পাব।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *