সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাসকে ছাড়িয়ে গেছে। এর পেছনে প্রভাবক হিসেবে ভূমিকা রেখেছে জ্বালানি তেলবহির্ভূত খাত। ওই সময় দেশটি ৩ দশমিক ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। এর আাগে ৩ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেন্ট্রাল ব্যাংক অব দি ইউএই (এসবিইউএই)। খবর দ্য ন্যাশনাল।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদনে সম্প্রতি বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে জ্বালানি তেলবহির্ভূত খাতে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ৬ দশমিক ২ শতাংশ। মোট জিডিপিতে এ খাতের অবদান প্রায় ৭৩ শতাংশ।
২০২৩ সালে তুলনামূলক প্রবৃদ্ধি বাড়লেও চলতি বছরের জন্য পূর্বাভাস কমিয়েছে এসবিইউএই। এর আগে ৪ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে বলা হলেও সংশোধন করে ৩ দশমিক ৯ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে।
এসবিইউএই বলছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের জ্বালানি তেলবহির্ভূত খাত দ্রুত উন্নতি করছে। এছাড়া কভিড-১৯ মহামারীর নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় ইউএইতে ভ্রমণ বেড়েছে। ফলে পর্যটন খাতের পুনরুদ্ধার সম্ভব হয়েছে। একই সঙ্গে আবাসন ও নির্মাণ খাত গতি পেয়েছে। সব মিলিয়ে জ্বালানি তেলবহির্ভূত খাতে প্রবৃদ্ধি ভালো হয়েছে। চলতি বছরও এ প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে।
অবশ্য জ্বালানি খাতেও আশার খবর রয়েছে। চলতি মাসে জ্বালানি তেল রফতানিকারক দেশগুলোর জোট ওপেক প্লাস দৈনিক ৩৬ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেল জ্বালানি তেল উৎপাদন কমানোর বিষয়ে সম্মত হয়েছে। ২০২৫ সাল পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকার কথা। যদিও এর আগে জোটের নেতারা চলতি বছরের সেপ্টেম্বর থেকে আগামী বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মাসিক ভিত্তিতে দৈনিক ২২ লাখ ব্যারেল জ্বালানি তেল উৎপাদন কমানোর চিন্তা করেছিলেন। কিন্তু এখন বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় মাসিক উৎপাদন বৃদ্ধি বা কমানোর কথা বলছেন তারা। ওপেক প্লাসের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উৎপাদন করলে, আগামী বছর নাগাদ ইউএই শুধু জ্বালানি তেল খাতেই ৮ দশমিক ৪ শতাংশে প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে।
এসবিইউএই বলছে, ওপেক প্লাসের সিদ্ধান্তের কারণে জ্বালানি তেল উৎপাদন উল্লেখযোগ্য হারে বাড়তে পারে। সব মিলিয়ে ২০২৫ সালে এ খাতে প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ২ শতাংশে গিয়ে পৌঁছাতে পারে।
ইউএইর অর্থমন্ত্রী আব্দুল্লাহ বিন তৌক বলেন, ‘চলতি বছর দেশটিতে ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলছে, আগের পূর্বাভাস ৩ দশমিক ৫ শতাংশের তুলনায় দেশটিতে দশমিক ৫ শতাংশীয় পয়েন্ট বেশি প্রবৃদ্ধি হতে পারে।’
এসবিইউএই বলছে, দেশটিতে ২০২২ সালে মূল্যস্ফীতির পরিমাণ ছিল ৪ দশমিক ৮ শতাংশ। ২০২৩ সালে তা ১ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে আসে। জ্বালানি তেলের দাম কমে যাওয়ায় এ সময়ে পরিবহন ভাড়া কমেছে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। তবে হোটেল-রেস্তোরাঁ, খাদ্য ও পানীয় এবং ফার্নিচার ও আসবাবের দাম বেড়ে গেছে।