ভিসা ও সরকারের অনুমোদন সহ অন্যান্য প্রস্তুতি থাকলেও ফ্লাইটের টিকিট পাচ্ছেন না মালয়েশিয়া গমনেচ্ছু শ্রমিকরা। ফলে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন ৩১ হাজার ৭০১ জন শ্রমিক।

আজ শুক্রবার (৩১ মে) বন্ধ হচ্ছে দেশটির শ্রমবাজার। কেননা মালয়েশিয়ার গত মার্চের ঘোষণা অনুযায়ী, ৩১ মে এর পর আর কোনো নতুন বিদেশি শ্রমিক দেশটিতে প্রবেশ করতে পারবেন না।

জানা যায়, শেষ দিনে মালয়েশিয়া যেতে ঢাকার হযরত শাহজালাল (রা.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হাজারও শ্রমিক ভিড় করছেন। বিমানবন্দরে পৌঁছালেও ফ্লাইটের টিকিট পাচ্ছেন না তারা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন এসব শ্রমিকরা।

ভুক্তভোগীরা বলছেন, তারা তিন-চার দিন ধরে বিমানবন্দরে অবস্থান করছেন। কেউ নিয়োগকর্তার খোঁজ পাচ্ছেন, কেউ আবার পাচ্ছেন না।

বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য বলছে, গত ২১ মে পর্যন্ত প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ৮৩৪ জন কর্মীকে মালয়েশিয়া যাওয়ার অনুমোদন দেয়। ২১ মের পর আর অনুমোদন দেওয়ার কথা না থাকলেও বিএমইটির তথ্য বলছে, মন্ত্রণালয় আরও এক হাজার ১১২ জন কর্মীকে দেশটিতে যাওয়ার অনুমোদন দিয়েছে।

অর্থাৎ, বৃহস্পতিবার (৩০ মে) পর্যন্ত পাঁচ লাখ ২৪ হাজার ৯৪৬ জন কর্মীকে মালয়েশিয়া যাওয়ার অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার (৩০ মে) পর্যন্ত দেশটিতে চার লাখ ৯১ হাজার ৭৪৫ জন কর্মী মালয়েশিয়ায় গেছেন।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সূত্রে জানা যায়, আজ বাংলাদেশ থেকে মাত্র এক হাজার ৫০০ জন কর্মী মালয়েশিয়ায় যেতে পারবেন। অর্থাৎ, ভিসা ও অনুমোদন পাওয়ার পরও ৩১ হাজার ৭০১ জন কর্মীর মালয়েশিয়া যেতে পারছেন না।

বিমানবন্দর সূত্রে আরও জানা যায়, আজ সকাল থেকে রাত পর্যন্ত হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সাতটি ফ্লাইট মালয়েশিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশের দুটি, ইউএস-বাংলার দুটি, মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি, এয়ার এশিয়ার একটি এবং বাতিক এয়ারলাইন্সে একটি ফ্লাইট রয়েছে।

ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্সিজ অব বাংলাদেশের (আটাব) সভাপতি আবদুস সালাম আরেফ বলেন, শেষ সময়ে মালয়েশিয়ায় কী পরিমাণ কর্মী যাবেন, তা আগে থেকে জানানো হলে এয়ারলাইনসগুলো প্রস্তুতি নিতে পারত।

গত ২৯ মে এক মতবিনিময় সভায় ঢাকায় নিযুক্ত মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার হাসনা মোহাম্মদ হাসিম বলেন, জাতীয় নিরাপত্তা ও সীমান্ত সুরক্ষার জন্য মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে চাকরি নিশ্চিত করে চাহিদার ভিত্তিতে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার আবারও খুলে দেওয়া হবে।

বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্রমবাজার মালয়েশিয়া। দেশটিতে বর্তমানে প্রায় ১৫ লাখ বাংলাদেশি কর্মী আছেন। গত বছর সেখানে গেছেন ৩ লাখ ৫১ হাজার ৬৮৩ জন কর্মী। এ বছরের এপ্রিল পর্যন্ত গেছেন ৪৪ হাজার ৭২৭ জন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *