জামালপুরের ইসলামপুরে সাবেক ভূমি প্রতিমন্ত্রী রাশেদ মোশাররফের সহধর্মিণীর জানাজায় গিয়ে নিজের আইফোন খুইয়েছিলেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক। প্রায় দেড় মাস পর মালয়েশিয়া থেকে মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এর সঙ্গে জড়িত থাকায় ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বুধবার (৫ জুন) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ের এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ।

গ্রেফতাররা হলেন- জাকির হোসেন (৪০) মাসুদ শরীফ (৪১), মো. জিয়াউল মোল্লা জিয়া (৪৮), রাজিব খান মুন্না (২২), মো. আল আমিন মিয়া (২০), মো. আনোয়ার হোসেন ওরফে সোহেল (২৭), মো. রাসেল (৩৮), মো. খোকন আলী (৩৬) ও মো. বিল্লাল হোসেন (৩৭)। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ চোরাই মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।

ডিবির হারুন বলেন, ‘মোবাইল ফোন চুরির ঘটনায় প্রতিমন্ত্রীর সহকারী একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে মালয়েশিয়া থেকে ফোনটি উদ্ধার করা হয়। চোর চক্রের ৯ জনকেও গ্রেফতার করা হয়।’

এই চোর চক্রটি ৮০টি গ্রুপে ভাগ হয়ে কাজ করে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ঢাকায় কাজ করা চক্রটি কখনও পকেট মারে, কখনও ছোঁ মেরে মোবাইল নিয়ে যায়, আবার কখনও ছিনতাই করে। আর ঢাকা বাইরে চক্রের সদস্যরা বড় কোনও সমাবেশ, জানাজা বা জনসমাবেশকে টার্গেট করে চুরি করে। চক্রের কোনও সদস্য চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়লে অন্য সদস্যরা ভুক্তভোগীকে ঘিরে রেখে তাদের সদস্যদের পালাতে সাহায্য করে। এইসব চেক্রর নেতৃত্ব দেন জাকির হোসেন।’

হারুন আরও বলেন, ‘ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে চুরি বা ছিনতাই করা ফোনগুলো জাকিরের কাছে জমা দিতেন চক্রের সদস্যরা। জাকির দামি মোবাইলগুলো বিদেশে থাকা চক্রের সদস্যদের কাছে পাঠিয়ে দেন। বিশেষ করে মালয়েশিয়া, ভারত ও দুবাইয়ে। বিদেশে পাঠানোর জন্য চোরাই মোবাইল ফোন প্রথমে তারা চট্টগ্রামের রিয়াজউদ্দিন মার্কেটে থাকা চক্রের সদস্যদের কাছে পাঠাতো। পরে সেখান থেকে কুরিয়ারের করে বিভিন্ন দেশে পাচার করা হতো।’

৩০ এপ্রিল সকালে জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার শহীদ মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ বীর উত্তম গার্লস হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে প্রয়াত ভূমি প্রতিমন্ত্রীর সহধর্মিণী হাসনা মোশাররফের জানাজায় অংশ নেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান দুলাল।

নামাজ শুরুর আগে নিজের ব্যবহৃত আইফোন ব্র্যান্ডের ফিফটিন প্রো ম্যাক্স মোবাইলটির এয়ারপ্লেন মোড অপশনটি অন করে কোনো এক ব্যক্তির হাতে দেন তিনি। নামাজ শেষ হলে সেই ব্যক্তি পরবর্তীতে মোবাইল ফোনটি ফেরত দেননি। কার কাছে মোবাইলটি দিয়েছেন তা মনে করতে পারছিলেন না মন্ত্রী। এরপর তার সহকারী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *