অনেকে হয়তো ভুক্তভোগী। আমি সংযুক্ত আরব আমিরাতে আছি বিগত ২০০৭ সাল থেকে । এই দীর্ঘ ৪ বছর আমার চোখের সামনে অনেক বেদনা দায়ক ঘটনা ঘটেছে। আমি দেখেছি খেটে খাওয়া মানুষের চোখের পানি ঝড়তে।দেখেছি মানুয়ের অষহায়ত্ব। দেখেছি মানুয়ের বেচে থাকার লড়াই।

এদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাংলাদেশি প্রবাসীদের অবধান অনেক।বরাবরই বাংলাদেশিরা অবহেলিত। বাংলাদেশি ছাড়াও এখানের ইন্ডিয়া, পাকিস্তান, ভূটান, নেপাল, শ্রীলন্কা, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, মিসর, আরো অনেক দেশের লোকদের সাথে পাল্লা দিয়ে কাজ করে আসছে।তবে আমার জানা মতে বাংলাদেশিদের চাইতে অন্যান্য দেশের লোকের অবস্থা খুবই ভাল। তারা এইখানে বাংলা দেশিদের চাইতে বেশি সুবিধা ভোগ করে।বেতনের দিক থেকে বলতে গেলে অন্যান্য দেশের কর্মীর বেতন অনেক বেশি। এর নানা কারন ও আছে।বেশি ভাগ শ্রমিক কাজ করতে আসে কোনা কাজ না শিখেই। কাজ শিখা থাকলেও সেই কাজের ভিসা নিয়ে না আসাটায় আরএকটি কারণ। এটা কাজ শিখার জায়গা নয়।এটা কাজ করার জায়গা। প্রায় বেশি ভাগ শ্রমিক অপ্রস্তুত অবস্থায় ভিসার নাম শোনেই লাফ দিয়ে চলে আসতে চেষ্টা করে।ফলে এখানে পদে পদে তাকে অবহেলিত হতে হয়। এই দেশে আসার আগে কোন একটা কাজ শিখে ঐ কাজের ভিসা নিয়ে আসলে সফল হওয়া সম্ভব।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে অন্যান্য দেশের দূতাবাস গুলো অনেক সক্রিয়। কিন্তু দু:খের বিষয় আমাদের দেশের দূতাবাস এর করুন অবস্থা। সাধারণ প্রবাসিরা দূতাবাস থেকে কোন রকম সাহায্য সহযোগীতা পায়না। যা অন্যান্য দেশের লোকেরা পায়। সমস্যায় পড়ে যদি কেউ দূতাবাসে ফোন করে , তাহলে তাদেরকে অন্যান্য জায়গা দেখিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ আছে।

এই মরুভূমির প্রখর রোধে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে যারা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সচল রেখেছে, তাদের প্রতি সরকার কোর প্রকার দৃস্ঠি দেয়না। তাদের ভাল মন্দের খবর নেয় না। তবুও তারা নানা কষ্ঠে জীবন যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে।এর মধ্যে অনেকে বলে ফেলে—-

প্রবাসিদের কষ্টার্জিত অর্থে তাদের আত্বীয় স্বজনের হাসি দেখলে সব কষ্ঠ ভূলে য়ায়।কেননা আমি বিগত ২ বছর ধরে একটি টাইপিং এর দোকানে কাজ করি। আমি দেখেছি কিভাবে ভিসা দালালরা সাধারণ মানুষকে বিপদে ফেলে।

ভিসা দালালদের পরিকল্পনা : বাংলাদেশে বেকার সমস্যা তীব্র প্রর্যায় গিয়ে পৌছেছে। ফলে দেশের বাইরে যাওয়ার জন্য নানা পন্থা অবলম্বন করে থাকে। কেউ বৈধ্য আবার কেউ অবৈধ্য । এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কিছু অসাধু ভিসা দালালরা হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। দেশের বাড়ি, ভিটা,জমি বিক্রি করে টাকা তুলে দিচ্ছে দালাল দের হাতে।ফলে এখানের এসে পরিস্থিতি হয় উল্টো। খারাপ মানুষ সব জায়গায়, সবদেশে ,সবখানে আছে। এদেশের নাগরিক দের মধ্যেও অনেক খারাপ লোক আছে। এখন আমরা জানবো কিভাবে একজন সাধারণ মানুষ দালালের খপ্পরে পড়ে নি:স্ব হয়।

এখানে কিছু মানুয় ভিসা লাভের আশায় কিছু প্রতিষ্ঠান খুলে বসে আছে। যাদের অতীত এবং ভবিষ্যত কিছুই নেই। দালালরা এইসব প্রতিষ্ঠান থেকে ভিসা নিয়ে সাধারণ মানুষকে বিপদে ফেলে। এর মধ্যে জাল ভিসা ও আছে।

এই বার দেখুন একজন লোকের মাষিক খরচ। খাওয়া দাওয়া- ২০০ দিরহাম।

ইন্সুরেস্স লাগে মাষিক হিসাবে ৫০ দিরহাম ( বাধ্যতামুলক)।

national identity card- দুই বছরে ২৭০ দিরহাম( বাধ্যতামুলক)

তাছাড়া নিজের পারসোনাল খরচ তো আছেই। আর বাকি থাকে কত ?

ভিসা দালাল দের খপ্পর থেকে বাচার উপায়:

১। আপনি যথা সম্ভব আপনার আত্বীয় স্বজনের মাধমে বিসা নেয়ার চেষ্ঠা করুন।

২। ভিসা পেলে ভিসার নিচের অংশে মালিকের মোবাইল নং আছে কিনা তা দেখে নিন।থাকলে কথাবার্তা জানা এমন কোন লোক দিয়ে মালিকের কাছে ফোন করে ভিসার সত্যতা যাচায় করুন।এবং কি কি সুবিধা পাওয়া যাবে জেনে নিন।

৩। ভিসা আসল কিনা যাচায়ের জন্য ভিসার এন্টি নম্বার , ভিসা নং নিয়ে ইন্টারনেটে চেক করুন। (মনে হয় নেটে শুধু কোম্পানি ভিসা গুলো চেক করা যায়)

৪। যথা সম্ভব আপনি যে কাজ জানেন সেই কাজের ভিসা নিয়ে আসতে চেষ্ঠা করুন।

৫। আপনার কাজের সম্ভব্য স্থান কোথায় হবে তা নিচ্ছিত হোন।

৬। কখনো অতিরিক্ত টাকা খরচ করে আসবেন না। আপনার খরচ এর সাথে আপনার মাষিক বেতন কত হবে তা নিরুপণ করুন।

৭। আপনার ভিসা কোম্পানির হলে কোম্পানির অতীত সম্পর্কে জানার চেষ্টা করুন। দরকার হলে কোম্পানির নাম নিয়ে ইন্টারনেটে র্সাচ করে জেনে নিন।

৮।Travel agency থেকে ভিসা নিতে সাবধান হোন। এতে ৮০% ধোকাবাজ। তারা টাকার লোভে কোনরকমে শ্রমিক দের এদেশে পাঠিয়ে দেয়। সম্প্রতি, ঢাকা থেকে প্রচুর লোক Al – Barari, Forest Management, এ এসেছিল ও আসছে। যারা এসেছিল তাদের কাছ থেকে travel agency গুলো অনেক অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে।এখানে আল বারারী কোং টি সকল শ্রমিক কে তাদের Site benona তে পাটায় । সেখানে কি জানেন। শুধু বালু আর বালু সেখানে এক সপ্তাহ হাটলে ও আপনি কোন বাড়ি ঘর বা কোন প্রানী খোজে পাবেন না। অনেকে ঐ খানথেকে পালিয়ে গেছে। অনেকে দেশে ফিরে গেছে।

এখন আপনি চিন্তা করুন ছেলেটির ভবিষ্যত কি হবে। এই ভাবে প্রতারিত হচ্ছে হাজার মানুষ । এই সব দালালের খপ্পর থেকে বাচতে আমাদের আরো সচেতন হতে হবে।

সূত্রঃ মোহাম্মদ দৌলত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *